ইঞ্জিনিয়ারিং কমপ্লিট করেই উদ্যোক্তা নিশাত আনজুম

উদ্যোক্তা নিশাত আনজুম হীরার বাবা মসিউর রহমান অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা, মা খালেদা আক্তার গৃহিণী। তিন ভাইবোনের মধ্যে দ্বিতীয় তিনি। জন্ম নেত্রকোনা সদরে। শৈশব, কৈশোর কেটেছে সেখানেই। নেত্রকোনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও সরকারি মহিলা কলেজে লেখাপড়া করে ময়মনসিংহের কলেজ অব বিজনেস সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে লেখাপড়া করেছেন। অনার্স ৩য় বর্ষে পড়ার সময় বিয়ে হয়ে যায়। পড়াশোনা শেষে চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, কিন্তু চাকরিতে আর যাননি। বরং উদ্যোক্তা হওয়ার চিন্তাটা মাথায় আসে এবং তাই হয়েছেন। প্রথম সন্তান জন্ম নেওয়ার তিন মাস পর তার উদ্যোগের শুরু।

উদ্যোক্তা হওয়ার পেছনে তার মাথায় যে চিন্তাটা কাজ করেছে সেটা হলো: পরিশ্রম ও দক্ষতা দিয়ে নিজেকে সবার সামনে পরিচিত করতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা নিজের পরিচিতি সবার সামনে তুলে ধরতে হবে। পার্সোনাল ব্র্যান্ডিংটা স্ট্রং করতে হবে। সেটা করতে নিজের উদ্যোগকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন আনজুম হীরা।

পনেরো হাজার টাকা পুঁজি দিয়ে উদ্যোগ শুরু করেন তিনি। হ্যান্ড পেইন্ট পাঞ্জাবি দিয়ে শুরু। তারপর ব্লক ও বাটিকের পণ্য তৈরি করেন, যেগুলো তিনি নিজে ডিজাইন করছেন। কাজ করছেন ব্লক ও বাটিকের ম্যাচিং আউটফিট নিয়ে। তৈরি করছেন শাড়ি, পাঞ্জাবি, থ্রি পিস, বাচ্চাদের পোশাক।

হীরা নিজেও ব্লক ও বাটিকের পোশাক পরতে অনেক পছন্দ করেন। সেই ভাললাগা থেকেই এই পণ্য নিয়ে কাজ। কয়েকজন কর্মী আছেন, যারা তাকে ব্লক বাটিক করতে সহযোগিতা করেন। তার পেজের নাম Sanjum’s (সানজুম’স)। দেশের বাজারের বাইরে উদ্যোক্তা পণ্য রপ্তানি করছেন আমেরিকাতে।

দেড় বছরে উদ্যোক্তা পণ্য সেল করেছেন পাঁচলাখ টাকার বেশি। এখন পরিকল্পনা হচ্ছে ছোট একটি কারখানা যেখানে কিছু মানুষের কর্মসংস্থান হবে। তারপর একটি শোরুম দেওয়ার ইচ্ছে আছে। এছাড়া ওয়েবসাইটের ডোমেইনও কিনতে চান।

তিনি স্বপ্ন দেখেন তার প্রতিষ্ঠান সানজুম’স হবে ম্যাচিং আউটফিটের অন্যতম বিশ্বস্ত ব্র্যান্ড। পরিশ্রম ও দক্ষতা দিয়ে সবার কাছে নিজের ব্র্যান্ডকে পরিচিত করাতে চান তিনি। “আমার উদ্যোগের বর্তমান অবস্থা ভালোই চলছে। উদ্যোগকে যেন সবাই এক নামে চেনেন সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।”

তার উদ্যোগকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সবসময় পরিবার পাশে ছিল। তার বাবা, মা, ভাইবোন, বিশেষ করে হাসব্যান্ড ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন সবাই তাকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন।

তবে, হীরার কথায়, সবথেকে বড় সাপোর্ট পাচ্ছেন তার দুই বছরের মেয়ে সানজুম এর কাছ থেকে। ছোট্ট একটি মেয়ে এতো লক্ষ্মী আর শান্ত, সে যদি তাকে সাপোর্ট না করতো কোনভাবেই এত দূর আসা সম্ভব হতো না। এভাবে নিজের চেষ্টা এবং মেয়ে সানজুমের নীরব অনুপ্রেরণা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন সানজুম’স এর উদ্যোক্তা নিশাত আনজুম হীরা।

শেয়ার করুন:

Facebook
Twitter
Pinterest
LinkedIn

সম্পর্কিত পোস্ট

দেড়শ নারীকে স্বাবলম্বী করছেন ফেরদৌসি পারভীন!

পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি নারীদের একটা অংশ উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু পুঁজির অভাবে অনেকেই উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারছে না। থামি. পিননসহ বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী পোশাক প্রস্তুত করতে

উদ্যোক্তাদের জন্য মানসিক চাপ কমানোর কিছু পন্থা

আমরা আজকে উদ্যোক্তাদের জন্য আলোচনা করবো মানসিক চাপ কমানোর পন্থা নিয়ে কারন উদ্যোক্তারা অনেকেই মানসিক চাপ নিয়ে তার উদ্যোগ কে সফলার দিকে নিয়ে যেতে পারে

বাড়ির ছাদে ছাগল পালন করে স্বাবলম্বী রায়হান!

‘পরিবারে কোনো আর্থিক অনটন ছিল না। পড়েছি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাই আমার মতো ছেলে কেন ছাগল পালন করবে, এটাই ছিল মানুষের আপত্তির কারণ। কিন্তু মানুষের সেসব