কাশ্মীরি আপেল কুল এখন ঝিনাইদহে!

ঝিনাইদহে কাশ্মীরি জাতের আপেল কুলের সফল আবাদ করা হয়েছে। প্রথমবারেই ভালো ফলন পাওয়ায় এ জাতের কুল আবাদে আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় চাষীদের মধ্যেও। অন্যদিকে জেলায় কাশ্মীরি আপেল কুলের আবাদ বাড়াতে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

জানা গেছে, ভারত থেকে কুল গাছের ২ হাজার ৫০০ কচি ডগা এনে প্রথম রোপণ করেন সদর উপজেলার গান্না গ্রামের তিন ভাই আনিসুর রহমান, রবিউল ইসলাম ও আলাউদ্দিন আহমেদ। প্রাথমিকভাবে তারা মাত্র সাত বিঘা জমিতে এ কুলের ডগা রোপণ করেন। গত বছর মে মাসে প্রথম এসব চারা রোপণ করেন তারা। এরই মধ্যে আগাম রোপণ করা গাছে প্রচুর কুল ধরেছে।

এ বিষয়ে কুলচাষী আনিসুর রহমান বলেন, ইন্টারনেটে ছবি দেখে আমরা কাশ্মীরি জাতের আপেল কুল সম্পর্কে জানতে পারি। এজন্য ভাতিজাকে ভারতে পাঠাই। সে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বনগাঁ থানার চৌবাড়িয়া গ্রামে এ কুলের সন্ধান পায়। সেখান থেকে কাশ্মীরি আপেল কুল গাছের আড়াই হাজার কচি ডগা কিনে আনি। এ ডগা দেশে এনে দেশী কুল গাছের সঙ্গে কলম করে চারা তৈরি করি। গত জ্যৈষ্ঠ (মে) মাসে চারাগুলো তিন ভাইয়ের সাত বিঘা জমিতে রোপণ করি। এর মধ্যে আগাম লাগানো সাড়ে তিন বিঘা জমিতে গাছে কুল ধরছে।

সরেজমিনে কুল বাগান ঘুরে দেখা যায়, বাগানের প্রত্যেকটি গাছে প্রচুর কুল ধরেছে। কুলের ভারে নুয়ে পড়েছে গাছের ডাল। দেখলে মনে হবে ছোট আপেল। পরিপক্ক একটি কাশ্মীরি আপেল কুল বাউকুলের থেকে অনেক বড় হয়। একেকটি গাছে ৩০ কেজি থেকে এক মণ পর্যন্ত কুল ধরেছে। একেকটি কুলের ওজন ৫০ থেকে ৮০ গ্রাম। কয়েক দিনের মধ্যে কুল পাকতে শুরু করবে।

আনিসুর রহমান বলেন, এরই মধ্যে ব্যবসায়ীরা বাগানে আসতে শুরু করেছেন। আমরা তিন বিঘা বাগানের কুল ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা দামে বিক্রি করেছি। এছাড়া আমরা ঢাকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছি। তারা বলেছেন, প্রতি কেজি কুল ১০০ টাকারও বেশি দামে বিক্রি করা যাবে। ফলন ভালো হওয়ায় স্থানীয় অনেক চাষী আমাদের কাছ থেকে চারা কিনতে চেয়েছেন।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোফাকখারুল ইসলাম বলেন, আমাদের দেশে কাশ্মীরি আপেল কুলের চাষ প্রথম ঝিনাইদহে হচ্ছে। এর আগে দেশের কোথাও এ জাতের কুলের চাষ হয়নি। এটি একটি সম্ভাবনাময় ফল। কুল আবাদ করতে তিন ভাইকে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। এছাড়া এ জাতের কুলের আবাদ যাতে আগামীতে আরো বৃদ্ধি পায়, সেদিকে বিশেষ নজর রয়েছে কৃষি বিভাগের।

শেয়ার করুন:

Facebook
Twitter
Pinterest
LinkedIn

সম্পর্কিত পোস্ট

দেড়শ নারীকে স্বাবলম্বী করছেন ফেরদৌসি পারভীন!

পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি নারীদের একটা অংশ উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু পুঁজির অভাবে অনেকেই উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারছে না। থামি. পিননসহ বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী পোশাক প্রস্তুত করতে

উদ্যোক্তাদের জন্য মানসিক চাপ কমানোর কিছু পন্থা

আমরা আজকে উদ্যোক্তাদের জন্য আলোচনা করবো মানসিক চাপ কমানোর পন্থা নিয়ে কারন উদ্যোক্তারা অনেকেই মানসিক চাপ নিয়ে তার উদ্যোগ কে সফলার দিকে নিয়ে যেতে পারে

বাড়ির ছাদে ছাগল পালন করে স্বাবলম্বী রায়হান!

‘পরিবারে কোনো আর্থিক অনটন ছিল না। পড়েছি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাই আমার মতো ছেলে কেন ছাগল পালন করবে, এটাই ছিল মানুষের আপত্তির কারণ। কিন্তু মানুষের সেসব