কবুতর পালনে প্রতি মাসের আয় ৫০ হাজার টাকা!

মানুষের জীবনে বিভিন্ন ধরনের শখ থাকে। সেই শখ কখনো কখনো সাফল্যের শীর্ষে নিয়ে যেতে পারে। তার জলন্ত উদাহরণ কুমিল্লার লাকসাম পৌরসভার উত্তর পশ্চিমগাঁও গ্রামের হাজী জয়নাল আবদীন। অল্প পূঁজি দিয়ে কবুতরের ব্যবসা শুরু করে ওই খামারী এখন প্রতিমাসে আয় করছেন প্রায় লাখ টাকা। একই সঙ্গে স্থানীয় অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে ওই খামারে।

জানা যায় ,লাকসাস পৌরশহরে পশ্চিমগাঁও গ্রামের জয়নাল আবেদিন অভাবের কারণে লেখাপড়া বেশি করতে পারেননি। ছোট বেলা থেকেই পশুপাখি পালনের আগ্রহ ছিল তার। জয়নাল আবেদীন ১৯৮৫ সালে দেড় টাকায় শখের বশে এক জোড়া কবুতর কিনে পালন করা শুরু করেন। কিছুদিন পালন করার পর একজোড়া বাচ্চা হয়ে কবুতরের বড় করে জোড়া বিক্রি করেন ৭ টাকায় তখন থেকেই মাথায় আসে বাণিজ্যিকভাবে কবুতর পালন করার।

২০০২ সালে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে দেশী-বিদেশী কিছু কবুতর কিনে বাড়ির আঙ্গিনায় বাণিজ্যিকভাবে গড়ে তোলেন কবুতরের খামার। প্রতি মাসে খামারের বিভিন্ন প্রজাতির কবুতর থেকে প্রায় ৬০ থেকে ১০০ জোড়া বাচ্চা পাওয়া যায়। যার বাজার মূল্য ৩০ হাজার টাকা। এছাড়া প্রতিদিন কবুতরকে ৩০ কেজি গম, খেসারি, শষ্য, খাবার দিতে হয়। ঔষধ ও বিভিন্ন খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মাসে আয় হয় ৪০-৫০ হাজার টাকা।

তার খামারে বিদেশী বোখরা, কিং, সিলভার, সিরাজি, কালা, সিরাজী লাল, বোমবাই, ফিলিয়েজার, ইয়োলো, বাগদাদ হোমার, ইন্ডিয়ান লোটন, হোয়াট চায়না, আওল রেড বাগদাদ, গিরিবাজ, ময়ূরীসহ ১২ জাতের দেশী-বিদেশী মূল্যবান কবুতর রয়েছে তার খামারে।

জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে কবুতর প্রেমিকরা বিভিন্ন প্রজাতির কবুতর পালনের খবর শুনে এক নজর দেখতে ছুটে আসেন তার খামারে।শত শত কবুতরের বাক-বাকুম ডাকে এবং রং বে-রংয়ের কবুতর দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন।

জয়নালের কবুতর খামার ও সফলতা দেখে লাকসাম উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম মেম্বার,উত্তর লাকসামের আল-আমিন,সুমন,উত্তর পশ্চিমগাঁও গ্রামের আমির হোসেন দুলাল,আলী আশ্রাফ, গফুর, আর্দশ সদর উপজেলার রানীর বাজারের মাসুদ, সদর দক্ষিণের ভুশ্চি গ্রামের ফরহাদ,বাগমারার মিজানুর রহমান সহ ছোট-বড় প্রায় ৫০টি খামার গড়ে ওঠেছে।

কবুতর খামারি জয়নাল বলেন, ১৯৮৫ সালে দেড় টাকায় শখের বশে এক জোড়া কবুতর কিনে পালন শুরু করি। ২০০৫ সালে ছোট একটি খামার দিয়ে কবুতর পালন শুরু করি। ২০১০ সালে আমি তা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কবুতর খামার শুরু করি। এখন আমার খামারে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ১ হাজার কবুতর রয়েছে।

তিনি বলেন,কবুতর পালন করতে হলে খোলামেলা পরিবেশের প্রয়োজন। এতে কবুতরের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়। তা ছাড়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদফতর ও সরকারি-বেসরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা পেলে আরও ভালো করতে পারবো।

এ বিষয়ে লাকসাম উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. হারুন রশিদ চৌধুরী জানান, প্রশিক্ষণ নিয়ে কবুতর পালন বেশ লাভজনক। আমরা কবুতর খামারীদের জন্য যেকোনো সাহায্য সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।

তথ্যসূত্র: বিডিটাইমস৩৬৫ডটকম।

শেয়ার করুন:

Facebook
Twitter
Pinterest
LinkedIn

সম্পর্কিত পোস্ট

দেড়শ নারীকে স্বাবলম্বী করছেন ফেরদৌসি পারভীন!

পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি নারীদের একটা অংশ উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু পুঁজির অভাবে অনেকেই উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারছে না। থামি. পিননসহ বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী পোশাক প্রস্তুত করতে

উদ্যোক্তাদের জন্য মানসিক চাপ কমানোর কিছু পন্থা

আমরা আজকে উদ্যোক্তাদের জন্য আলোচনা করবো মানসিক চাপ কমানোর পন্থা নিয়ে কারন উদ্যোক্তারা অনেকেই মানসিক চাপ নিয়ে তার উদ্যোগ কে সফলার দিকে নিয়ে যেতে পারে

বাড়ির ছাদে ছাগল পালন করে স্বাবলম্বী রায়হান!

‘পরিবারে কোনো আর্থিক অনটন ছিল না। পড়েছি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাই আমার মতো ছেলে কেন ছাগল পালন করবে, এটাই ছিল মানুষের আপত্তির কারণ। কিন্তু মানুষের সেসব