ব্যবসায়ীদের জীবনের জন্য শিক্ষণীয় গল্প!

একটি ছোট শহরে এক সফল ব্যবসায়ী ছিলেন। সৎ উপায়ে কঠিন পরিশ্রম করে সে অনেক টাকা পয়সার মালিক ছিলেন। তার এক বিশ্বস্ত কর্মচারী তার এই সফলতার শুরু থেকেই তার সাথে ছিল। একদিন সেই বিশ্বস্ত কর্মচারী তার মালিককে বললেন আপনার তো অনেক ধন সম্পদ রয়েছে এবং আমি আপনার সাথে অনেক দিন ধরেই আছি। আমাকে কিছু টাকা দিন আমি নিজেই এখন ব্যবসা করতে চাই।

এই কথা শুনে ব্যবসায়ী খুশী মনে বললেন তুমি আমার অনেক দিনের বিশ্বস্ত কর্মচারীই নয় আমার বন্ধুও বটে, আমি তোমাকে সাহায্য করব।এরপরে ব্যবসায়ী বললেন তুমি এক কাজ কর, কালকে সকালে তোমার বাড়ি থেকে বের হয়ে একটি ব্যান্ড পার্টি নিয়ে বাজনা বাজাতে বাজাতে আমার কাছে আসবে ও সবাই বলবে আমার কাছ থেকে পুঁজি আনতে যাচ্ছ।

যেই কথা সেই কাজ, বিশ্বস্ত কর্মচারী মালিকের কথা মত কাজ করলেন। ব্যান্ড পার্টি সহ বাজনা বাজাতে বাজাতে মালিকের কাছে আসলেন।তখন ব্যবসায়ী তাকে একটি কাপড়ের পুটলি দিলেন এবং শর্ত ছিল যে কর্মচারী কখনও সেই পুটলি খুলবেন না। সে যেন এই পুটলি যত্ন করে তার কাছে রেখে দেয় এবং কালকে থেকে বাকীতে মাল কিনে ব্যবসা শুরু করে। কিছুক্ষন পরে ব্যবসায়ী বললেন তুমি এখন যাও এবং মানুষকে বলতে বলতে যাও মালিকের কাছ থেকে অনেক টাকা নিয়ে আসছি!

বিশ্বস্ত কর্মচারী সব কথা শুনলেন এবং সেই মোতাবেক বলতে বলতে গেলেন, মালিকের কাছ থেকে অনেক টাকা নিয়ে এসেছি। তার পরের দিন ঘটল মজার ঘটনা, সেই কর্মচারী বাজারে যেতে না যেতেই তাকে ছোট ছোট ব্যবসায়ীগন বাকীতে পণ্য দিয়ে দিচ্ছে, কেউবা তার সাথে পাটনার হতে চাচ্ছে, কেউ অগ্রিম টাকা দিয়ে দিচ্ছে। কারন সবাই জানত এই কর্মচারী অনেক টাকা নিয়েই ব্যবসা শুরু করেছে কারন তার মালিক ছিল সবথেকে বড় ব্যবসায়ী।

এভাবে সকলের সহযোগিতায় ব্যবসা করে সেই কর্মচারী অনেক টাকা পয়সার মালিক হয়ে গেলেন। একদিন তার মনে হল তার মালিকের কাছ থেকে আনা পুটলিটা কোন কাজেই আসল না, তাই সেটি খুলে দেখার ইচ্ছা হল। যেই কথা সেই কাজ, সে যখন পুটলি খুলল আর অবাক হয়ে গেল কারন, পুটলিতে শুধু ১০ পয়সা রাখা।

মালিকের এই কান্ডে সদ্য ধনী হওয়া কর্মচারী রাগে তার মালিকের কাছে গেলেন এবং জিজ্ঞাসা করলেন কেন তাকে ১০ পয়সা দিয়ে অপমান করা হয়েছিল। মালিক বললেন তোমাকে যা দিয়েছিলাম ওইটাই পাওনা ছিল, তোমার না নিতে মন চাইলে আমাকে ফিরিয়ে দাও। এই কথা শুনে কর্মচারী বললেন এই নিন আপনার ১০ পয়সা।

মালিক জিজ্ঞাসা করলেন আমি তোমাকে এই ভাবে দিয়েছিলাম? তুমি কালকে সকালে তোমার বাড়ি থেকে ব্যান্ড পার্টি বাজাতে বাজাতে টাকা ফেরত দিয়ে যাবে এবং মুখে বলবে মালিকের দেওয়া টাকা ফেরত দিতে যাই। তার পর থেকে ঘটতে থাকে সব অদ্ভুত ঘটনা, কেননা কেউ তাকে আর বাকিতে মালামাল দিচ্ছে না, কারন কেউ তার তাকে ভরসা করতে পারছে না। ফলে অচিরেই সে আবার আগের মত দরিদ্র হয়ে গেল।

পরে একদিন তার মালিকের সাথে দেখা হলে মালিক বললেন আমি তোমাকে যা দিয়েছিলাম সেটা হচ্ছে সুনাম বা Goodwill যা তুমি ধরে রাখতে পারলে না।

শেয়ার করুন:

Facebook
Twitter
Pinterest
LinkedIn

সম্পর্কিত পোস্ট

দেড়শ নারীকে স্বাবলম্বী করছেন ফেরদৌসি পারভীন!

পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি নারীদের একটা অংশ উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু পুঁজির অভাবে অনেকেই উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারছে না। থামি. পিননসহ বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী পোশাক প্রস্তুত করতে

উদ্যোক্তাদের জন্য মানসিক চাপ কমানোর কিছু পন্থা

আমরা আজকে উদ্যোক্তাদের জন্য আলোচনা করবো মানসিক চাপ কমানোর পন্থা নিয়ে কারন উদ্যোক্তারা অনেকেই মানসিক চাপ নিয়ে তার উদ্যোগ কে সফলার দিকে নিয়ে যেতে পারে

বাড়ির ছাদে ছাগল পালন করে স্বাবলম্বী রায়হান!

‘পরিবারে কোনো আর্থিক অনটন ছিল না। পড়েছি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাই আমার মতো ছেলে কেন ছাগল পালন করবে, এটাই ছিল মানুষের আপত্তির কারণ। কিন্তু মানুষের সেসব